তীব্র জ্যামে আটকে নাকাল রাজধানীবাসী। ১০ মিনিটের রাস্তা পেরোতে কেটে যাচ্ছে দেড় ঘন্টারও বেশি সময়। ১ ঘন্টা সময় হাতে নিয়ে বেরিয়েছিলেন যারা, যাত্রার মাঝামাঝি এসে তাদের কেটে গেছে ২ ঘন্টার ওপর সময়।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) রাজধানীজুড়ে ছিল তীব্র যানজট। দুপুরের দিকে টানা তিন ঘণ্টা স্তব্ধ হয়ে পরে নগরীর মূল সড়ক, লেন, অলি-গলি এমনকি বিকল্প সড়কগুলোও। প্রচণ্ড গরমে সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে আটকে থেকে নাকাল নগরবাসী। অনেকে পায়ে হেঁটেও রওনা দেন গন্তব্যে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই থেমে থেমে চলছিল যানবহন। দুপুরের দিকে যখন কিছুটা খালি হওয়ার কথা ঠিক তখনই আরও উদ্ভট চেহারা নিয়ে উদয় হয় যানজট। দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে পৌনে ৩ টা পর্যন্ত স্তব্ধ ছিল রাজধানীর সড়ক, অলি-গলি, লেন সবকিছু। বেলা যত বেড়েছে তীব্র তাপদাহের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অসহনীয় যানজট।
যানজটে নাকাল নারী-শিশু-বৃদ্ধরা ছিলেন এক শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায়। রাজধানীর পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার, রায় সাহেব বাজার, পল্টন, মতিঝিল, বেইলী রোড, বাড্ডা, রামপুরা এবং নতুন বাজার এলাকায় ছিল তীব্র যানজট। সেই সাথে নগরীর প্রাণকেন্দ্র ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডিসহ আশপাশের প্রায় সব এলাকাই যেন আটকে ছিল তীব্র যানজটে।
আজ ছিল মহামারির দুবছর পর পুরোদমে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরুর প্রথম দিন। শিক্ষার্থীদের অনেকেই রিকশা, কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অথবা ব্যক্তিগত গাড়িতে করে স্কুল-কলেজে যাওয়ায় সকাল থেকেই শুরু হয় যানজট।
ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা বলছেন, স্কুল খোলায় সকাল থেকেই অভিভাবকরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্তানদের নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অনেকের সঙ্গেই গাড়ি রয়েছে। আর এই গাড়ির কারণেই সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। একদিকে স্কুল-কলেজ, অন্যদিকে অফিস; দুইয়ে মিলেই সড়কে গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে। আর এর ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে বাসের জন্য অপেক্ষারত রাশেদ আপন বলেন, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী। অফিসের জরুরি কাজে যেতে হচ্ছে আশুলিয়ায়। আধঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করলেও বাসের দেখা পাননি।
আজমেরী গ্লোরী পরিবহনের কন্ডাক্টর শফিকুল ইসলাম বলেন, মহাখালী পর্যন্ত সড়কে মোটামুটি অন্যদিনের মতো চিত্র পেলেও এরপরই শুরু হয় করুণ যানজট। সকাল ৯টায় সাভারের চন্দ্রা থেকে রওনা হয়ে পুরো পথের যানজট মাড়িয়ে শফিকদের বাস যখন সদরঘাটের ভিক্টোরিয়া পার্ক পৌঁছায় তখন ঘড়ির কাটায় সময় পৌনে একটা। তিনি জানান, শুরুর দিকে ভালোভাবেই এসেছিলেন। মহাখালী থেকে শুরু, সদরঘাট আইসা শেষ করেন। পুরে রাস্তায় জ্যাম। পাশ থেকে এক যাত্রী ক্ষোভের সুরে বললেন, শাহবাগ থেকে জজকোর্টে আসতে আমার ২ ঘণ্টা ২০ মিনিট লেগেছে।
ডিএমপি’র ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের ডিসি সাহেদ আল মাসুদ বলেন, স্কুলে আসা অনেক গাড়িই সড়কের পাশে পার্কিংয়ে রাখা হয়। স্কুল-কলেজ পুরোদমে খোলায় সড়কে গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে, সেইসঙ্গে অফিসগামী মানুষের চাপতো আছেই। যে কারণে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজটের।




















