বর্তমান প্রজন্মের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশকে নিয়ে আর কেউ খেলতে পারবে না। এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কখনো কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সমাপনী উপলক্ষে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত ‘জয় বাংলার জয়োৎসব’ শিরোনামে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর সমাপনী উপলক্ষ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ‘জয় বাংলার জয়োৎসব’ শিরোনামে চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। আজকে যে প্রজন্ম তাদের কাছে আমার এটাই থাকবে আহ্বান, আমরা কিন্তু পরিকল্পনা দিয়ে গেছি। যেমন ২০২১ পর্যন্ত আমরা পরিকল্পনা দিয়েছিলাম, সেটা বাস্তবায়ন করেছি। আমরা স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করেছি, নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট করেছি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেছি, মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছি, দেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। বাংলাদেশকে কেউ যেন অবহেলা করতে না পারে, বাংলাদেশের মানুষ যেন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে, শিক্ষায়-দীক্ষায় জ্ঞানে, প্রযুক্তি জ্ঞানে, বিজ্ঞানে সবদিক থেকে যেন আমরা এগিয়ে থাকতে পারি।
তিনি আরও বলেন, ‘‘জাতির পিতা স্বাধীনতার পর দেশে ফিরেই একটি স্বাধীন রাষ্ট্র কীভাবে চলবে তার দিকনির্দেশনা ঘোষণা করেন। জাতির পিতা শুধু স্বাধীনতা দেননি, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলেছিলেন। ঘুণে ধরা সমাজ ব্যবস্থা ভেঙে নতুন সমাজ গড়ার ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। তৃণমূল মানুষ যেন ক্ষমতাসীন হন সেই ব্যবস্থা তিনি নিয়েছিলেন। ঠিক সেই সময় এলো চরম আঘাত। মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন তিনি।
‘‘এরপর অন্ধকারের যাত্রা শুরু। বাংলাদেশ হারিয়ে ফেলে তার স্বাধীনতার চেতনা, জয় বাংলার স্লোগান। ৭ মার্চের ভাষণ হয় নিষিদ্ধ-বঙ্গবন্ধুর নাম ও ছবি নিষিদ্ধ। ২১টি বছর এভাবে বাংলাদেশের বিজয় ইতিহাসকে পদদলিত করা হয়। একটি মন্দ ইতিহাস ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ইতিহাস কেউ মুছে ফেলতে পারে না। সত্যের জয় হবেই। আজ সেটাই হয়েছে।’’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০ বছরের মধ্যে একটি সময় ছিল বিজয় অর্জন ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার। তারপর আরেকটি অধ্যায় হলো ২১ বছরের শোষণ বঞ্চনা। হত্যা-ক্যু অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের রাজনীতি। ৫০ বছরের মধ্যে ২৯ বছর কিন্তু উন্নয়ন হয়নি। কেবল জাতির পিতার ক্ষমতাকাল এবং ১৯৯৬ সালে মানুষ কিছুটা উন্নয়নের ছোঁয়া পায়।
আজ আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমার প্রতিটি ঘর আলোকিত করেছি। এ দেশের একটি মানুষও ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। আমরা এটাও নিশ্চিত করবো। এ পথে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি।’’
তিনি বলেন, ‘‘নতুন প্রজন্মের কাছে আমার এটাই আহ্বান থাকবে—আমরা পরিকল্পনা দিয়ে গেছি ২০৪১ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে। ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান আমরা করেছি। এ দেশের মানুষ কীভাবে উন্নত জীবন পাবে—সেই লক্ষ্য নিয়েই আমাদের পরিকল্পনা।’’
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আহ্বায়ক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সদস্য সচিব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া বক্তব্য রাখেন।




















