খুব ঠাণ্ডা মাথায় কিলিং মিশন সম্পন্ন করেন মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ। ঢাকার মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান হত্যাকাণ্ডের মূল এই শুটার ঘটনার স্থান থেকে পালিয়ে বগুড়ার একটি আবাসিক হোটেলে উঠেছিলেন।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে সেখান থেকে সীমান্তপথে অন্য দেশে পালানোর পরিকল্পনা ছিল মাসুমের। বগুড়ার অখ্যাত হোটেলে উঠতে তাকে সহায়তা করেছে এক বন্ধু। তবে শেষ রক্ষা হয়নি তার । গ্রেপ্তারের সময় ধীরস্থির ও স্বাভাবিক ছিলেন মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকাশ স্বীকার করেছে যে হত্যার আগের দিনই টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল তার।
আসামির বরাত দিয়ে রোববার ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার টিপু ও প্রীতিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তবে তার আগের দিন অর্থাৎ বুধবারই টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা ছিল শুটার মাসুমের। এ কারণে টিপুকে রেস্টুরেন্ট থেকে তার বাসায় যাওয়ার রাস্তা অনুসরণ করে গুলি করার প্রস্তুতি নেয় আকাশ। কিন্তু বেশি লোকজন থাকায় ব্যর্থ হয় সে।
হাফিজ আক্তার বলেন, পরের দিন আবার সে টিপুকে অনুসরণ করে। টিপুর গাড়ি শাহজানপুরে রাস্তায় যানজটে দাঁড়ালে টিপুকে লক্ষ্য করে এলাপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যান আকাশ।
তিনি বলেন, আকাশ তার নামে হত্যা মামলাসহ চার-পাঁচটি মামলা আছে বলে সে দাবি করেছে। নিজেকে সে ফেরারি বলে পরিচয় দিয়েছে। সে হতাশাগ্রস্ত ছিল। মামলার কারণে বাড়িঘরে যেতে পারে না, মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে পারে না। যারা তাকে আওয়ামী লীগ নেতাকে খুন করতে ভাড়া করেছিল, তারা বলেছিল, হত্যা করতে পারলে এসব মামলা থেকে সে রিলিফ পাবে। এ কারণে সে হত্যাটি করে। তবে তাকে কন্ট্রাক্ট করা হয়েছে কাটআউট পদ্ধতিতে।
মাসুম মোহাম্মদ আকাশ গ্রাফিকস আর্টস নিয়ে লেখাপড়া করে মুগদা এলাকায় কেবল টিভির ব্যবসা করতেন। তার স্ত্রী, সন্তান আছে, বাবা একজন স্কুল শিক্ষক।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১০টার দিকে শাহজাহানপুর থানার আমতলা এলাকায় জাহিদুল ইসলাম টিপুকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় গুলিতে নিহত হন কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান জামাল প্রীতিও। এ ঘটনায় রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হলে রাত পৌনে ১১ টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।




















