অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় আজ শনিবার পুরোদমে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। তাদের দেওয়া হয়েছে বিশেষ ক্ষমতা বিক্ষোভ ঠেকাতে। দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতবায়ে রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভ ঠেকাতে এর আগে শুক্রবার রাতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল।
কয়েক শ মানুষ সংকট মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদ জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোয় প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনী গুলিবর্ষণ ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর রাতেই কলম্বোয় কারফিউ জারি করা হয় সেখানে। সহিংসতায় একজন আহত হন এবং ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরদিন জরুরি অবস্থা করে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ে রাজাপক্ষে বলেছিলেন, জননিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সরবরাহ এবং জরুরি সেবা ঠিক রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কয়েক মাস ধরে রিজার্ভের সংকটের কারণে পণ্য আমদানি ব্যাহত হচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। লাগামহীনভাবে এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে। ব্যাপক জ্বালানিসংকটের মধ্যে চুলা জ্বালানোর কেরোসিন নিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এ সময় সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের জন্য সেনাদের ইতিমধ্যেই জ্বালানি স্টেশনসহ বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে। জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরপরই মাঠে নামে সেনাবাহিনী। তবে শনিবার আরও বেশিসংখ্যক সেনাসদস্য মোতায়েন থাকতে দেখা যায়। স্বাভাবিক সময়ে শ্রীলঙ্কায় পুলিশকে সহযোগিতা করে থাকে সেনাবাহিনী। তবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করায় সেনাবাহিনী বেসামরিক লোকজনকে আটক করার বিশেষ ক্ষমতা পেয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বিক্ষোভ দমনে শ্রীলঙ্কা সরকারের কঠোর অবস্থানের নিন্দা জানিয়েছে। কলম্বোয় নিয়োজিত দেশটির রাষ্ট্রদূত জুলি চুং বলেছেন, শ্রীলঙ্কানদের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। গণতান্ত্রিক মতপ্রকাশের জন্য তা অপরিহার্য।
তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হতে পারে বলে শ্রীলঙ্কা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা ইতিমধ্যে অনেক শহরে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ দেশজুড়ে কারফিউ জারি করার কথা বিবেচনা করছে।




















