কুয়েটে সিএসইর দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সিএসই বিভাগের দ্বিতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমানকে মারধর করেছে ছাত্রলীগ। পরে তাকেসহ দুজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে আক্রমণাত্মক মানহানিকর তথ্য প্রকাশ করে কুয়েট ছাত্রদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলার অবনতি চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। এ অভিযোগে সোমবার বিকালে কুয়েটের নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. সাদেক হোসেন প্রামাণিক খানজাহান আলী থানায় মামলা করেন।

শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমান ভোলার তজমুদ্দিন উপজেলার সোনাপুরের আব্দুস সালামের ছেলে। মামলার অপর আসামি রেজওয়ান স্যাম ভোলার বোরহানউদ্দিন মুশির হাট গ্রামের বাসিন্দা। রোববার রাতে জাহিদুর রহমানকে গ্রেফতারের সময় ড. এমএ রশিদ ছাত্রহলে ছাত্রলীগকর্মীরা তাকে ব্যাপক মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই রাতেই পুলিশ তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

কুয়েটের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন প্রামাণিক জানান, ওই শিক্ষার্থীসহ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও গোপালগঞ্জ ইউনিভার্সিটির আরও দুই শিক্ষার্থী ‘টেলিগ্রাম’ অ্যাপসের মাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার ও দেশবিরোধী সমালোচনা করত। তারা সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়েও আপত্তিকর আলোচনা করেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা রোববার রাত ৯টার দিকে ড. এমএ রশিদ হলের ১১৭ নম্বর কক্ষ থেকে তাকে ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনসহ আটক করে। পরে হল প্রভোস্টসহ কুয়েটের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন।

ড. এমএ রশিদ হলের প্রভোস্ট মো. হামিদুল ইসলাম জানান, ওই শিক্ষার্থীর কাছে দেশবিরোধী কিছু মেসেজ, কিছু খেলাফত টাইপের বই পাওয়া যায়। বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে সম্পৃক্ত ও কিছু চ্যাট করেছে সে। সন্দেহ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, তাকে গ্রেফতারের সময় শিক্ষার্থীরা চড়-থাপ্পড় দেয়। কিন্তু সেভাবে সে অসুস্থ নয়।

কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করায় হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছেলেটির ওপর উত্তেজিত হয়েছিল। তাকে চড়-থাপ্পড় মারা হলেও গুরুতরভাবে আঘাত করা হয়নি। আমি ক্যাম্পাসের বাইরে ছিলাম। বিষয়টি জানার পর হলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। হলের সব শিক্ষার্থীই ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিল। এর মধ্যে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ছিল এটাই স্বাভাবিক। তবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনো ঘটনা ঘটেনি।

খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন জানান, গ্রেফতার জাহিদুর রহমানকে কুয়েটের ড. এমএ রশিদ হল থেকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সে কিভাবে অসুস্থ হয়েছে সেটা হল কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।

spot_img
পূর্ববর্তী নিবন্ধজাপানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাহিদা মেটানোর জন্য আইটি খাতের তরুণদের প্রয়োজন
পরবর্তী নিবন্ধজার্মানির শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে, ভিসা জটিলতার কারণে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে