ব্যবসায়ীর কাছে লাখ টাকা দাবির অভিযোগ সংক্রান্ত ঘটনায় দশমিনা ইউএনও মো. মহিউদ্দিন আল হেলালের পক্ষে আন্দোলন-সংগ্রামে নেমেছেন স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষক সংগঠন। এই আন্দোলনে শিক্ষক সংগঠন কাজ করলেও জামায়াত-বিএনপির একটি চক্র নেপথ্যে রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জনৈক তাপস নামে এক মিষ্টি দোকানি ইউএনওকে অভিযুক্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগ করায় ২ দফা কর্মসূচি পালন করছে মহলটি।
রোববার উপজেলা চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন দশমিনা উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির ওয়াজিউল্লাহ মাওলানা এবং দশমিনা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে গেলে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বেতাগী শিকদাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহিরুল আলম বলেন, ইউএনওর বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা অভিযোগ হয়েছে। শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে আমরা মানববন্ধন করেছি।
ওই মানববন্ধনে নেতৃত্বে দেওয়া বাংলাবাজার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ইউএনও যথেষ্ট ভাল মানুষ। তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগটি বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। উচ্ছেদ অভিযানে একটি মহল ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযোগ করতে পারেন। তাছাড়া অভিযোগকারীর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
কর্মসূচিতে জামায়াতের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জামায়াত-বিএনপির নেতা হলেও তারা শিক্ষক। জহিরুল ইসলাম বিএনপি নেতা হলেও তিনি তরঙ্গ খেলা ঘরের সাধারণ সম্পাদক। জহিরুল আলম সংগঠক হিসেবে অংশ নিয়েছে। ওয়াজিউল্লাহ মাওলানা উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির হলেও একটি মাদ্রাসার শিক্ষক।
তিনি আরও বলেন, ইউএনও শিক্ষাখাতে আমূল পরিবর্তন আনায় আমরা নিজ উদ্যোগে কর্মসূচি পালন করেছি।
এর পূর্বেও শনিবার বিকালে ছাত্রদল নেতা আবুল বশারের সঞ্চালনায় মানববন্ধন পালন করেন ছাত্রদলের একাংশ। এ প্রসঙ্গে দশমিনা সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও হাঝিরহাট বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক সমিতি উদ্যোগ নিয়েছে। তাই আমরা কর্মসূচি অংশ নিয়েছি। ইউএনও অনেক ভাল কাজ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলালের বিরুদ্ধে তাপস নামে এক মিষ্টি ব্যবসায়ী লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী বলেন, দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে দশমিনা উপজেলা বাজারে করে আসা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি দশমিনা ইউএনও মহিউদ্দিন আল হেলাল ভেঙে দেন। পরে তাকে ইউএনওর কক্ষে তুলে নিয়ে লাখ টাকা দাবি করা হয়। শুধু তাপস নয়, ওই অভিযানে অন্তত ৫০-৬০ প্রতিষ্ঠানকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। তাপস বিষয়টি পাঁচ কান করলে তাকে মোবাইল কোর্টে সাজা দেয়ার হুমকিও দেন ইউএনও। তাপসের করা অভিযোগটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ২০ জুলাই অফিসিয়ালভাবে গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইকবাল মাহামুদ লিটন বলেন, শুনেছি তার বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ হয়েছে। সেটা সত্য কি মিথ্যা, তা নিয়ে মাথা ঘামাইনি।
মানববন্ধন নিয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার অজানা। তবে যদি ইউএনওর পক্ষে জামায়াত-বিএনপি অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালন করে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে ইউএনও ভালো মানুষ।
এ প্রসঙ্গে দশমিনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, একটি অভিযোগ হয়েছে, যা জেলা প্রশাসনের তদন্তাধীন আছে। এটা জুলাই মাসের ঘটনা। যেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে গেলে লোকজন প্রতিবাদ করেছেন।
জামায়াত-বিএনপির লোকজন কর্মসূচি করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমার কোনোটার সঙ্গে সম্পৃক্ততা নাই। আমি গলাচিপার অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। তাই গলাচিপায় ছিলাম। অনেকে ছবি পাঠিয়েছে, দেখলাম স্কুল কলেজের ব্যানার।




















