গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানা এলাকায় চলছে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ ও বর্ধিত চুলার রমরমা বাণিজ্য। অবৈধ গ্যাস সংযোগের ভয়াবহতা ঠেকাতে ইতোমধ্যে গাজীপুর তিতাস কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে কয়েক দফায় অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীদের বাসা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে না হতেই টাকার বিনিময়ে মিলছে এসব সংযোগ। আবার একই সঙ্গে চলছে চুলা বর্ধিত করণের হিড়িকও যেন এক ধরনের চোর পুলিশ খেলা।
এ সংযোগ প্রদানের ক্ষেত্রে কথিত একটি ঠিকাদার চক্রের সঙ্গে জড়িত আছেন তিতাসের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
এ চক্রের অন্যতম সদস্য কথিত ঠিকাদার গাছা ফকির মার্কেট এলাকার জয়নাল, চান্দরা এলাকার আলমগীর, আলামিন, বড়বাড়ী এলাকার আয়নাল, কুনিয়া তারগাছ এলাকায় অবৈধ সংযোগ প্রদানকারী লোকমান ও বোর্ডবাজার এলাকায় বাবু।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, তিতাস কর্তৃপক্ষের অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযানে নগরীর মালেকের বাড়ি, ছয়দানা, সাইনবোর্ড, মোগরখাল, হারিকেন, পলাগাছ, কলমেশ্বর, বোর্ডবাজার, উত্তর খাইলকুর, দক্ষিণ খাইলকুর, গাছা, বড়বাড়ী, কুনিয়া তারগাছ ও জয়বাংলা রোড এলাকায় যেসব অবৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাইজার খুলে নেওয়া হয়েছে।
এরপর তিতাস অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে রাতের অন্ধকারে এ চক্রটি রাইজার সংগ্রহ করে পুনরায় সংযোগ দেয়। এসব সংযোগের ক্ষেত্রে নেওয়া হয় ৭০ হাজার থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত। আবার চক্রটি প্রতি মাসে বিলের নামে অবৈধ গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এতে সরকার হারাচ্ছে বিপুল অংকের রাজস্ব অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এদিকে কলমেশ্বর এলাকার মো. তাজুল ইসলাম জানান, সবচেয়ে বেশি অবৈধ গ্রাহক সৃষ্টি করেছেন বোর্ডবাজার এলাকার কথিত ঠিকাদার সোলেমান মুন্সী, তার ছেলে ফয়েজ মুন্সী ও বাবু। এরা অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে রাতারাতি বনে গেছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। এদের নামে বেনামে রয়েছে অঢেল সম্পদ। সরকারি খনিজ সম্পদ এভাবে লুটপাট করে নিজেদের আখের গোছালো। ওরা এখনো অবৈধ সংযোগ ও বর্ধিত চুলা দিয়েই যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে তিতাস কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না দুঃখ হয়। আর এসব অবৈধদের ভিড়ে আমাদের বৈধ গ্রাহকদের চুলা জ্বলে না অথচ মাস শেষে ব্যাংকে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে বিল দিতে হচ্ছে খুব কষ্টে আছি।
অপরদিকে কুনিয়া তারগাছ এলাকার শরীফুল আলম জানান, এলাকায় দালাল চক্রের মাধ্যমে চলছে অবৈধ সংযোগের ভয়ংকর কারবার এখানে একেকটি রাইজার থেকে ৪-৫টি বহুতল ভবনে অবৈধ চুলা জ্বলে। গ্যাস অফিসের লোকজন একদিকে কাটে অন্যদিকে দালালরা টাকা নিয়া সংযোগ দিয়ে দেয়। এটা তো নতুন কিছুই না হরহামেশাই চলছে।
এ ব্যাপারে গাজীপুর তিতাস অফিসের উপব্যবস্থাপক প্রকৌশলী শাহ নেওয়াজ লতিফ বলেন, আমরা জানতে পেরেছি একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে এ কাজগুলো হচ্ছে। দালালদের বিষয়েও খোঁজখবর নিচ্ছি, অবৈধ গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড় নেই। আমরা অবৈধ গ্যাসের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছি। গাজীপুরে একটিও অবৈধ সংযোগ থাকবে না।




















