৭ বছর ধরে শাহিন তার নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করে ছদ্মবেশ ধারণ করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় নিজের পরিচয় গোপন করার জন্য ক্রমাগতভাবে পেশা পরিবর্তন করে আসছিলেন শাহিন। এতকিছু করেও শেষ রক্ষা হয়নি তার।
অবশেষে র্যাব-১৪ জালে আটকা পড়ে দুটি হত্যা মামলার আসামি আলমগীর হোসেন ওরফে শাহিন (৩১)। তিনি একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। এসব হত্যা মামলা ও সাজা থেকে বাঁচতে নিজের নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করে শাহিন।
শনিবার সন্ধ্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের থলিয়ারা থেকে র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত শাহিন সদর উপজেলার নাটাই উত্তর এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্প।
এ সময় র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাফিউদ্দিন মোহাম্মদ যোবায়ের জানান, ২০১৫ সালে মার্চ মাসে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজের একদিন পর বিজয়নগরের বিষ্ণুপুরে ধানক্ষেতে মিলে সিএনজিচালক উজ্জ্বলের মরদেহ। পরে পুলিশের তদন্তে জানা যায়, উজ্জ্বলের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল আলমগীর হোসেন ওরফে শাহীনের। উজ্জ্বলের সিএনজিটি ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই শাহীন তার সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং হত্যার পর সিএনজিটি নিয়ে যায়। এই হত্যা মামলার পলাতক আসামি আলমগীর হোসেন ওরফে শাহিন।
এ ঘটনার এক মাস পর একই বছর ২১ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের বোল্লা টানপাড়া ব্রিজের নিচ থেকে সিএনজিচালক সোহরাবের হাত বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে পুলিশি তদন্তে এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটিত হয়। তদন্তে জানা যায়, যাত্রী বেশে সিএনজিতে উঠে সোহরাবকে হত্যা করে শাহীন। পরে সিএনজিটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আলমগীর হোসেন ওরফে শাহীন।
এসব ঘটনায় পলাতক আলমগীর হোসেন ওরফে শাহিন যাবজ্জীবন সাজা ও মামলা থেকে রক্ষা পেতে চলতি বছরের জুলাই মাসে নিজের নাম পরিবর্তন করে আল আমিন নাম ব্যবহার করে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র করে। সেখানে তার ঠিকানা নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ভাটিয়াপাড়া হিসেবে উল্লেখ করে।
র্যাবের তদন্তে আলমগীর হোসেন ওরফে শাহিন নামে কোনো তথ্য নির্বাচন কমিশনে পায়নি। পরে শাহিন মাদকের একটি মামলায় জেলে ছিল। জেলখানায় নথি থেকে আলমগীর হোসেন ওরফে শাহিন নাম ও ছবি পাওয়া গেলে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়।




















