নৌযান দুদিন বন্ধ রাখার পর ধর্মঘট প্রত্যাহার

পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান দুদিন বন্ধ রাখার পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিকনেতারা। সোমবার বিকালে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে মালিক-শ্রমিকের ত্রিপক্ষীয় সভা শেষে তারা এ ঘোষণা দেন। ওই সভায় নৌযানের আকারভেদে শ্রমিকদের মুজরি অন্তর্বর্তীকালীনের জন্য বিশেষ ভাতা হিসাবে ১২০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে নৌযান শ্রমিকদের মজুরি স্কেল নতুন করে নির্ধারণের সুপারিশ করতে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনা কমিটিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এসব সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে নৌধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা এলো।

সভা শেষে সোমবার বিকালে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. শাহআলম। তিনি বলেন, ধর্মঘটের ফলে সারা দেশে নৌপথে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে সরকার, মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্তে আশ্বস্ত হয়ে চলমান কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছি। এখন থেকে সারা দেশেই নৌযান শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে অনুরোধ করছি। 

শ্রমিকদের নতুন মজুরি নির্ধারণসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে রোববার থেকে সারা দেশে নৌধর্মঘটের ডাক দেয় বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন। এতে সারা দেশে নৌযান চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। এতে যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসে। ধর্মঘটে এমন ভোগান্তির পর সোমবার সকালে মালিকদের নিয়ে বৈঠক করে নৌপরিবহণ অধিদপ্তর। বিকালে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে শ্রম মন্ত্রণালয়। সভায় যাত্রীবাহী লঞ্চ শ্রমিক এবং এক হাজার গ্রস টনেজ সংবলিত পণ্যবাহী নৌযানের শ্রমিকদের অন্তর্বর্তীকালীন বিশেষ ভাতা ১২০০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। আর এক হাজার গ্রস টনেজের বেশি সক্ষমতার পণ্যবাহী নৌযান শ্রমিকদের বিশেষ ভাতা ১৫০০ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ভারতগামী নৌযানের শ্রমিকরা ওই দেশে অসুস্থ হয়ে পড়লে যাতে চিকিৎসা নিতে পারে, সেজন্য দেশটির সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। 

সভা শেষে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান বলেন, নৌ খাতে ছোট ছোট সমস্যা আছে। সেগুলো ছোট অবস্থায় সমাধান না করায় বড় আকার ধারণ করেছে। মালিক ও শ্রমিকদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে, তারা সহজেই সমঝোতায় এসেছেন। তিনি বলেন, মজুরি কাঠামো প্রস্তাবনা কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। এ কাজে মালিক ও শ্রমিকরা সহযোগিতা করবেন। এ সময় তিনি মজুরি কাঠামো নির্ধারণ কার্যক্রম শেষ করতে দেরি হওয়ায় দুঃখপ্রকাশ করেন।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তৌফিকুল আরিফ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর মো. নিজামুল হক, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ (যাত্রী পরিবহণ) সংস্থার সভাপতি মাহবুব উদ্দিন বীরবিক্রম, বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম প্রমুখ।

spot_img
পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘করোনার ব্যাচ’ হিসাবে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীরা বেশ ভালো করেছে
পরবর্তী নিবন্ধঅভিনেতা সিয়ামের চড়ের প্রতিশোধ নিয়েছেন চিত্রনায়িকা সুনেরাহ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে