জামালপুর কলেজে ফরম ফিলাপের অতিরিক্ত অর্থ আদায়

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর কলেজে ফরম ফিলাপের অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে অধ্যক্ষ আনন্দ চন্দ্র দাস, উপাধ্যক্ষ সামসুল আলম, প্রভাষক সোহাগ, অফিস সহকারী মো. লিটন ও অত্র কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান কিশোরের বিরুদ্ধে।

ফরম ফিলাপের ১০ হাজার টাকা দিতে না পারায় এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া হলো না মেধাবী শিক্ষার্থী সাফওয়ান ভাঙ্গীর। সে কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের বালুয়াভিটা এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের মৃত ছানাউল্লা ভাঙ্গীর ছেলে। পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে সে মানুষের বাড়িতে কাজ করে লেখাপড়ার খরচ জোগাত।

ভুক্তভোগী আবু সাফওয়ান জানায়, ৫ বছর বয়সে আমার বাবা মারা যান। তারপর থেকে মা অনেক কষ্টে মানুষের বাড়িতে কাজ করে আমাদের ভরণ-পোষণ ও লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে যাচ্ছেন। মানুষের বাড়িতে কাজ করে সাড়ে ৪ হাজার টাকা নিয়ে ফরম ফিলাপ করতে গেলে ১০ হাজার টাকার কমে ফরম ফিলাপ করা যাবে না বলে জানিয়ে দেন অধ্যক্ষ সামসুল আলম।

উপবৃত্তিভোগী মাহবুবা, ফাতেমা, হৃতিকা মীম, হিরা মনি রাণী, সামিয়া, মনিরা, ইতি, হালিমা, আদিবা, আরিফ, আব্দুল্লাহ, রেহেনা, মানসুরা, পারভেজ আহম্মেদ, তাসফিয়া, ফারিয়াসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী জানায়, নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন শিক্ষার্থীর কাছ  থেকে বেতন ও সেশন চার্জ বাবদ ১০ হাজার, সাড়ে ৬ হাজার, ৯ হাজার, ৬ হাজার, ৮ হাজার, সাড়ে ৭ হাজার টাকা রসিদবিহীন আদায় করছে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার রেবেকা সুলতানা বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার নূরে জান্নাত বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে উপবৃত্তিভোগী শিক্ষার্থীরা আবেদন করলে কলেজ কর্তৃপক্ষ টাকা ফেরত দিতে বাধ্য। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে  জামালপুর ডিগ্রি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অভিযুক্ত অত্র কলেজের অফিস সহকারী লিটন ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মনিরুজ্জামান কিশোরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন ও খুদেবার্তা পাঠিয়েও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ আনন্দ চন্দ্র দাস অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এক যুগ ধরে কলেজে আছি। শিক্ষার্থীরা কোনো দিন অভিযোগ করেনি। তবে চাইলে তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জানতে পারলাম। এলাকার কিছু লোক কলেজের নাম ভাঙিয়ে টাকা নিয়েছে। পরে চাপের মুখে কয়েকজন শিক্ষার্থীর টাকা ফেরতও  দিয়েছে।

উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বেতনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভর্তিসহ দুই-তিন মাসের টাকা নেওয়া হয়। পরবর্তীতে উপবৃত্তিভোগীরা চাইলে তাদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে অত্র কলেজের উপাধ্যক্ষ সামসুল আলম অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, অভিযোগটি মিথ্যা। আর সাফওয়ানের কাছে ১০ হাজার টাকা চাইনি- বলেছি যা এনেছ দিয়ে যাও।

spot_img
পূর্ববর্তী নিবন্ধকালীগঞ্জে যুবলীগ নেতা নিহত
পরবর্তী নিবন্ধ১৮ জনের করোনা শনাক্ত

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে