ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা

ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং এটির প্রয়োজনীয়তাই বা কি? এই প্রশ্নটি এখন সবার। উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী সবাই এখন ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে জানতে চায়। 

 

বর্তমান যুগ ডিজিটাল মার্কেটিং এর যুগ। এখন ঘরে বসে অনলাইনে কেনা কাটা থেকে শুরু করে, অনলাইনে ইনকাম করা সবটাই এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর ওপর নির্ভর করে।

ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে মানুষ মূলত সোশ্যাল মিডিয়ায় পন্যের বিজ্ঞাপনকেই বুঝে। কিন্তু আসলে ব্যাপারটা কি তাই?

আসুন আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা জানার চেষ্টা করি, ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং এর সাথে আরো কি কি ব্যাপার জড়িত আছে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধাপগুলোই বা কি? কি কি উপায়ে ডিজিটাল মার্কেটিং করা যায়? এই সব বিষয়গুলো নিয়েই আমাদের আজকের আলোচনা। কথা না বাড়িয়ে আসুন জেনে নেই ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

ডিজিটাল মার্কেটিং মানে অনলাইনে পন্য বা সার্ভিসের বিজ্ঞাপন প্রচার করাকেই বুঝায়। এখন সেটা হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে, হতে পারে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর মাধ্যমে, হতে পারে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের মাধ্যমে, আবার হতে পারে ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যমে।

আবার ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া যেমন, টিভি, রেডিও ইত্যাদির মাধ্যমে পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করাটাও এক ধরণের ডিজিটাল মার্কেটিং। এছাড়া মোবাইলে ইন্সট্যান্ট মেসেঞ্জিং, ইলেকট্রনিক বিলবোর্ড, মোবাইল এপ্লিকেশনের মাধ্যমে পণ্যের প্রচারণাকেও ডিজিটাল মার্কেটিং বলা যেতে পারে।

বুঝতেই পারছেন, আধুনিক বিশ্বে নিজেকে ও নিজের ব্যবসার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার কোনো বিকল্প নেই।

এতো গেল ডিজিটাল মার্কেটিং বলতে আমরা কি বুঝি। কিন্তু এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধাপগুলো কি কি? কখনো কি ভেবে দেখেছেন, এই ধাপগুলো কি হতে পারে? আসুন আমরা এবার এই ধাপগুলো সম্পর্কে জেনে নেই।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধাপসমূহ

ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেকগুলো ধাপ আছে। যেগুলো প্রয়োগ করে মূলত ডিজিটাল মার্কেটাররা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ডিজিটাল মার্কেটিং করে থাকেন। নিচের লিস্টে আপনি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কতগুলো ধাপ সম্পর্কে জানতে পারবেন। আসুন লিস্টটা দেখে নেই।

  1. এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
  2. এসইএম বা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
  3. কন্টেন্ট মার্কেটিং
  4. সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বা এসএমএম

  5. এফিলিয়েট মার্কেটিং
  6. ইমেইল মার্কেটিং
  7. সিপিএ মার্কেটিং     

 

এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ?

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization) বা এসইও (SEO) হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিনের কিছু নিয়মকানুন যা অনুসরণ বা প্রয়োগ করা হলে সার্চ ইঞ্জিন কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটটিকে সার্চ ইঞ্জিনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে এবং র‌্যাঙ্ক করে থাকে।

গুগলসহ যেকোনো সার্চ ইঞ্জিনে যখন আমরা কিছু লিখে সার্চ করি, তখন সার্চ রেজাল্ট যে পেজে আসে সে পেজকে বলা হয় SERPs (Search Engine Result Pages)। কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটটিকে SERPs-এ প্রথম দিকে দেখানোই এসইও -র মূল কাজ।

এসইও -র মাধ্যমে কন্টেন্টের প্রাসঙ্গিকতা এবং ওয়েবসাইটের টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর সম্পর্কে লক্ষ্য রাখা হয় যাতে গুগল বা সার্চ ইঞ্জিনে বিভিন্ন রকম কন্টেন্ট র‍্যাংক করে এবং ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়ে। এসইও বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন: Technical SEO, On-Page SEO, Off-Page SEO, E-commerce SEO ইত্যাদি। 

অন পেজ এসইও কি?

যখন কোনো সার্চ ইঞ্জিনকে টার্গেট করে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর কাজ করার হয় তাকে অন পেজ এসইও বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, আপনার ব্লগ পেজ বা কোনো ই-কমার্স ওয়েবসাইটের ভিজিটর বৃদ্ধির জন্য অন পেজ এসইও ব্যবহার করতে পারেন।

এতোক্ষণ জানলাম, অন পেজ এসইও কি। এবার জেনে নেই অফ পেজ এসইও কি।

অফ পেজ এসইও কি?

অফ পেজ এসইও হলো সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ব্যবহার করে ওয়েবসাইটের বাইরে থেকে অপটিমাইজ করা। আরো সহজ ভাষায় বললে, লিংক বিল্ডিংয়ের মাধ্যমে ওয়েবসাইটের অর্গানিক ট্রাফিক বৃদ্ধি করাই অফ পেজ এসইও।

টেকনিক্যাল এসইও কি?

টেকনিক্যাল এসইও হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যা একটি ওয়েবসাইটকে অর্গানিক র‌্যাঙ্কিং(Organic Ranking) পাওয়ার জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ব্যবহার করে প্রযুক্তিগত প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে।

SEO কেন প্রয়োজন?

  • এসইও সোশ্যাল মিডিয়ার চেয়ে বেশি কার্যকর পদ্ধতি কারণ এর মাধ্যমে আপনার টার্গেটেড অডিয়েন্সরা খুব সহজেই আপনার কন্টেন্ট খুঁজে পাবেন।
  • কোনো প্রকার পেইড মার্কেটিং ছাড়া অল্প সময়ে অনেক অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছানো যায়।
  • কোনো প্র্রকার পেইড প্রোমোশন ছাড়াই ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বাড়ানো যায়।
  • লম্বা সময়ের জন্য ব্যবসাকে লাভজনক করতে সহায়তা করে।

SEO কীভাবে কাজ করে? SEO এর কাজ কি?

  • লিঙ্ক: এসইও করার সবচেয়ে শক্তিশালী টেকনিক হলো লিংক বিল্ডিং। এক ওয়েবসাইটের লিংক থেকে আরেক ওয়েবসাইটে যাওয়া আপনার এসইও র‍্যাঙ্ক বৃদ্ধি করে। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর হয়ে এসে আপনার মেনশন করা আরেকটা লিংকে ক্লিক করে, তাহলে সেটা অফ পেজ এসইও হয়ে গেলো। যে লেখায় যত বেশি র‍্যাঙ্ক করা ওয়েবসাইটের লিঙ্ক মেনশন করা হয়, সেসব পেজ সার্চ ইঞ্জিনের উপরের দিকে থাকে।
  • কন্টেন্ট: এসইও এর ক্ষেত্রে কন্টেন্ট বলতে সাধারণত ব্লগকে বোঝানো হয়। আপনার ব্লগ যদি কীওয়ার্ড সমৃদ্ধ হয় তাহলে খুব সহজেই ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আনা যাবে। আর কীওয়ার্ড রিসার্চ হলো, এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) -এর একটি এমন গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি ভাগ, যেখানে জনপ্রিয় এবং সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে অধিক পরিমাণে সার্চ হওয়া keywords এবং key phrase খুঁজে বের করা হয়।
  • পেজ স্ট্রাকচার: এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো ওয়েবসাইটের যে কোনো পেজ অপটিমাইজ করে বেশি ট্রাফিক বা ভিজিটর পাওয়া যায়। এটিকে অপটিমাইজ করতে আমরা ওয়েবপেজ ও এইচটিএমএল সোর্স কোড ব্যবহার করে থাকি। এটাকে অন পেজ এসইও বলা হয়। এটা দিয়ে ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ কাজ যেমন: মেটা টাইটেল, ইউআরএল সেটআপ, মেটা ডেসক্রিপশন, ইমেজ অপটিমাইজ, ইন্টারনাল লিঙ্কিং, সাইট স্পিড, ওয়েবমাস্টার টুল সাবমিশন, অ্যানালিটিকস সেট আপ ইত্যাদি অন্তর্ভূক্ত।                                                                                                                                                         

FREE SEO COURSE LINK: https://rb.gy/7btovj 

 

এসইএম বা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং ?

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংঃ 

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং হচ্ছে এক ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং। এই পদ্ধতিতে টাকা দিয়ে ওয়েবসাইট কে সার্চ ইঞ্জিনের ফার্স্ট পেজ এ র‍্যাংক করানো হয়। সার্চ ইঞ্জিনগুলোর মধ্যে রয়েছে গুগল, ইয়াহু, বিং ইত্যাদি। তবে এর মধ্যে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর পেইড ভার্সন গুগলেই বেশি লক্ষ্যণীয়। আপনি হয়তো খেয়াল করেছেন গুগলে কোনো কিওয়ার্ড লিখে সার্চ করলে মাঝে মাঝে কিওয়ার্ড এর পাশে এড/বিজ্ঞাপন লেখা থাকে। 

এগুলোই হলো সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর পেইড রেজাল্ট। সার্চ ইঞ্জিন এর ফার্স্ট পেজ এ রেজাল্ট দেখানোর জন্য সার্চ ইঞ্জিনগুলো কে টাকা দিতে হয়। যে যত বেশি টাকা খরচ করবে তার ওয়েবসাইট টি সার্চ ইঞ্জিনে সবচেয়ে উপরে থাকবে। এখানে সিপিসি অর্থাৎ কস্ট পার ক্লিক অনুযায়ী আপনাকে গুগল কে টাকা দিতে হবে। ওয়েবসাইট এর প্রোডাক্ট কতটা দামী তার উপর সিপিসি রেট নির্ধারণ করা হয়। আপনার ওয়েবসাইট এর প্রোডাক্টগুলো দামী হলে সিপিসি রেট ও হাই হবে অপরদিকে প্রোডাক্টগুলো কম দামী হলে সিপিসি রেট কম হবে। এভাবেই গুগল পেইড মার্কেটিং এর সুযোগ দিয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে নিশ্চিত আপনি ভিজিটর পাবেনই। এমন অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা তারাতাড়ি ট্রাফিক জেনারেট করার জন্য পেইড এড এর মাধ্যমে তাদের ওয়েবসাইট কে গুগলের ফার্স্ট পেজ এ নিয়ে আসে।

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর ব্যবহার

কিওয়ার্ডগুলোর তালিকা তৈরি করুনঃ 

এখানে কিওয়ার্ড র‍্যাংক করানো অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্যাক্টর। তাই আপনার ওয়েবসাইট কে গুগলে র‍্যাংক করাতে চাইলে কিওয়ার্ড এর তালিকা করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই সঠিক কিওয়ার্ডগুলো কে দক্ষতার সাথে বাঁছাই করুন। 

ওয়েবসাইট অপটিমাইজেশনঃ

আপনি এমন ভাবে আপনার কন্টেন্টগুলোকে সাজান যেনো একজন গ্রাহক একটি কিওয়ার্ড লিখে সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করলে আপনার কন্টেন্ট টি সবার আগে আসে। এজন্য ওয়েবসাইট টি কে ভালোভাবে অপ্টিমাইজড করা জরুরি। ওয়েবসাইট অপটিমাইজেশন এর সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন কন্টেন্ট এ এমন কোনো কিছু না থাকে যা ওয়েবসাইট এর লোডিং স্পিড কমিয়ে দেয়।

ইনবাউন্ড লিংক তৈরিঃ 

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ইনবাউন্ড লিংক তৈরি করা জরুরি। কেননা ইনবাউন্ড লিংক আপনার ওয়েবসাইট কে গুগলে র‍্যাংক করাতে সাহায্য করে। ইনবাউন্ড লিংক হলো সেই লিংক যা আমরা আমাদের এক আর্টিকেল থেকে ভিজিটর কে আমাদের ওয়েবসাইটেরই অন্য একটি আর্টিকেল এ নিয়ে যাই। সহজ কথায় ইনবাউন্ড লিংক ইন্টার্নাল লিংক হিসেবে অধিক পরিচিত। ইনবাউন্ড লিংক আপনার ওয়েবসাইট কে গুগলে র‍্যাংক করাতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর গুরুত্বঃ 

ইহা আপনার বিজনেস এর প্রচারের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যে যে কারণে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর গুরুত্ব অধিক তা নিচে আলোচনা করা হলো। 

ব্র‍্যান্ড অ্যাওয়ারনেস বৃদ্ধি করতেঃ 

সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর ফলে আপনার বিজনেস এর ব্র‍্যান্ড অ্যাওয়ারনেস বৃদ্ধি করা যায়। ব্র‍্যান্ডের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এ যে পদ্ধতিতে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় তাতে করে ব্র‍্যান্ড অ্যাওয়ারনেস বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ব্র‍্যান্ড অ্যাওয়ারনেস এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট টি টার্গেটেড কাস্টমারদের কাছে রিচ করবে। আপনার বিজনেস সবার সামনে তুলে ধরতে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং এর বিকল্প নেই। 

বিক্রি বাড়াতেঃ 

একটা অনলাইন বিজনেস শুরু করার মূল লক্ষ্যই হলো ওয়েবসাইট টি কে যেকোনো উপায়ে র‍্যাংক করিয়ে টার্গেটেড কাস্টমার এর কাছে পৌঁছানো এবং পণ্য বিক্রয় করা। তাই অতি দ্রুত গুগলের ফার্স্ট পেইজ অবস্থান করে এবং টার্গেটেড কাস্টমারদের কাছে পৌঁছাতে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং অধিক ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন ও কার্যকর ভূমিকা পালন করে কিন্তু এক্ষেত্রে সময় বেশি লাগে এবং SEO এক্সপার্ট লাগে। তাই আপনি যদি কম সময়ে আপনার কমার্শিয়াল ওয়েবসাইট টি কে গুগলে র‍্যাংক করিয়ে সেল জেনারেট করতে চান তাহলে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং সবচেয়ে ভালো। 

দ্রুত কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতেঃ 

দ্রুত কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে সার্চ ইঞ্জিনগুলো খুবই কার্যকরী। দ্রুত কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে আপনি সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং অথবা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন এই দুই টি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। তবে আপনি যদি খুব দ্রুত টার্গেটেড কাস্টমার এর কাছে পৌঁছাতে চান তাহলে টাকা খরচ করে সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং কে বেঁছে নিতে পারেন। এটি দ্রুত সময়ে আপনার কাংখিত কাস্টমারের কাছে আপনার প্রোডাক্ট পৌঁছে দিবে। 

সহজেই বিজ্ঞাপন পরিচালনাঃ 

পেইড এডগুলো খুব দ্রুত এবং সহজে পরিচালনা করা যায়। গুগল বিজ্ঞাপন পরিচালনা করার জন্য আপনাকে টাইম সেট করে দিবে। আপনি সেই সময়ে বিজ্ঞাপন চালু কিংবা বন্ধ রাখতে পারবেন। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইট এ ট্রাফিক জেনারেট করতে পারবেন। ফলে আপনার বিজনেস এর সেল বাড়বে। 

 

কন্টেন্ট মার্কেটিং?

কন্টেন্ট মার্কেটিং (Content Marketing) মূলত কন্টেন্টকে প্রকাশ করার একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। কোন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য সমূহের উপকারিতা, ব্যবহার উপযোগিতা, কোন তথ্যবহুল বিষয়, কিংবা কোন মজাদার অভিজ্ঞতার কথা যে মাধ্যমে তাদের টার্গেট অর্ডিয়েন্সের কাছে শেয়ার করে থাকে তাকে বলা হয় কন্টেন্ট মার্কেটিং।

কন্টেন্ট এর চারটি ধাপ রয়েছে। তা হল:

  • লিখিত মাধ্যম।
  • অডিও। 
  • ভিডিও। 
  • ছবি।                                                                                                                                                                                                        

 

একটা বিষয়, সব সময় মনে রাখা উচিত যে, আপনার কাজ বা আপনার চাকরি যেন আপনার জন্য লাভ-দায়ক হয়। কারণ যদি এমন কোন কন্টেন্ট বানানো হয়, যেখানে কোন অর্ডিয়েন্স কে কন্টেন্ট আকৃষ্ট করলেন না, সেই ধরণের কন্টেন্টের কোন মূল্য তারা দেবে না। তাহলে সেই কন্টেন্ট তৈরি করা পুরোপুরি অনর্থক। 

 

আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিত, তাদের সাহায্য করা, তাদের দৈনন্দিন জীবনধারায় পরিবর্তন, আপনাকে একজন লিডার হিসেবে নিজেকে তুলে ধরা। যার কারণে আপনার টার্গেট অর্ডিয়েন্স চোখ বন্ধ করে আপনাকে ভরসা করতে পারবে। যেকোনো ধরনের জীবনধারা পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করবে কন্টেন্ট মার্কেটিং। 

কেন করবেন কন্টেন্ট মার্কেটিং?

বলা বাহুল্য কন্টেন্ট “ব্র্যান্ড কোয়ালিটি” বৃদ্ধি করতে ভূমিকা পালন করে। আপনার প্রতিষ্ঠান যখন ভালো মানের কন্টেন্ট তৈরি করবে, তখন আপনার প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়তে থাকবে। আপনি যত বেশি আপনার টার্গেট অর্ডিয়েন্সকে সাহায্য করবেন, তত বেশি আপনি মার্কেটিং এ নিজের সুনাম বৃদ্ধি করতে পারবেন। 

এই পদ্ধতিটি মার্কেটে একটি ফ্ল্যাওহেল ইফেক্ট হিসেবে সকলের নিকট বেশ পরিচিত। যেমন আপনি মার্কেটিং জনপ্রিয় না হলেও, কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি মার্কেটে প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন। 

 

কন্টেন্ট মার্কেটিং মূলত এমন একটি পদ্ধতি যা আপনার ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে টার্গেট অর্ডিয়েন্স বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। আপনার টার্গেট অর্ডিয়েন্স, আপনার ফলোয়ার আপনাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন গুগল, ইউটিউব, বিভিন্ন ওয়েবসাইট গিয়ে আপনার কন্টেন্ট দেখার সুযোগ হবে।

ট্রেডিশনাল মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে নিজের প্রতিষ্ঠানকে, গ্রাহকদের সামনে উপস্থাপন করতে হত। কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় এই পদ্ধতির মাধ্যমে গ্রাহকগণ আপনাকে খুঁজে বের করতে পারবে। 

এটি শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট কারণে হয়ে থাকে:

  • তারা আপনার সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হবে। 
  • তারা আপনার সমস্যা সম্পর্কে জানবে। 
  • তারা আপনার সমস্যাটি সমাধান করবে। 

এই তিনটি মাধ্যম যেকোনো ব্যবসায় সেলসের ক্ষেত্রে, কন্টেন্ট মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে, আপনার প্রতিষ্ঠানকে উন্নতির শীর্ষে নিয়ে যেতে ভূমিকা পালন করবে। State of Inbound এর রিপোর্ট অনুযায়ী ৫৩% মার্কেটার Content Marketing কে সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

কন্টেন্ট স্ট্রাটেজি তৈরি

এতক্ষণে আপনি নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন, আপনার ব্যবসার উন্নতির ক্ষেত্রে কন্টেন্ট মার্কেটিং ভালো ভূমিকা পালন করবে। এখন নিজের প্রতিষ্ঠান উন্নতির ক্ষেত্রে আপনাকে একটি কন্টেন্ট মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি তৈরি করতে হবে। 

শিক্ষা, বিনোদন, বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক বিষয় সম্পর্কে, আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত, পণ্যসমূহ সম্পর্কিত কন্টেন্ট পাবলিশ করা, শেয়ারের করার উদ্দেশ্যে যে ধরণের পরিকল্পনা করা হয়, সেই পরিকল্পনাকে বলা হয় কন্টেন্ট মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি। 

একবাক্যে বলা যায়, কন্টেন্ট মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি মূলত গ্রাহকদের সাথে একটি সম্পর্ক  প্রতিষ্ঠা করা এবং তাদের জীবনে বিদ্যমান সমস্যা সমূহ তুলে ধরে তা সমাধান করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা।

যদি আপনি নিজের ভ্যালু তৈরি করতে চান, তাদের সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি-পরিপূর্ণ করে একটা লেখা তৈরি করতে চান, আপনার কন্টেন্ট তখন সফল হবে। আপনি যদি তা করতে ব্যর্থ হয়ে থাকুন আপনার কন্টেন্ট যত ভালো কন্টেন্ট দেন না কেন আপনার কন্টেন্ট তখন আর প্রশংসা কুড়বেন। 

কন্টেন্ট তৈরির ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে

১. আপনার গ্রাহক সম্পর্কে জানতে হবে

এটি মূলত গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে করেই এক সেবা। তাই আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে যে  আপনার গ্রাহক কে হবে. তার উপর। তাদের চাহিদা কি? তারা কি ধরনের সমস্যা মোকাবেলা করছে? তারা কি খুঁজছে?

আপনার কাস্টমার আপনার সম্পর্কে ধারণা করার পূর্বে. আপনার নিজেকে তাদের সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। আপনাকে তাদের ভাষা অনুযায়ী বলতে হবে। আপনার প্রথম চাহিদা হবে, তাদের সম্পর্কে রিসার্চ করতে হবে। একজন কাস্টমারের চাহিদা কেমন হতে পারে? কি করতে পারে? তার উপর অনুসন্ধান করে তার চাহিদা সম্পর্কে জানতে হবে।

২. অনুসন্ধান করতে হবে কি ধরনের তথ্য তারা জানতে আগ্রহী

কাস্টমার আপনার বিজনেস থেকে কি ধরনের চাহিদা আশা করে, তা জানতে হবে। তাদের কি ধরনের চাহিদা থাকবে? আপনার থেকে কোন পণ্য কেনার পূর্বে তাদের কি ধরনের প্রত্যাশা বিদ্যমান তা জানতে হবে।

এটি মূলত আপনার কন্টেন্ট রোডম্যাপ। আপনার প্রথম ধাপ হল কন্টেন্ট। কাস্টমারদের জন্য কন্টেন্ট তৈরি করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা, আপনার বিদ্যমান প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে। 

৩. কি বলতে চায় সেই সম্পর্কে জানুন

  • আপনাকে সর্বপ্রথম ভাবতে হবে যে তারা কি ধরনের তথ্য অনুসন্ধান করে থাকে? কিভাবে আপনি তাদের সাথে যোগাযোগ করতে চাচ্ছেন?
  • আপনি কোন ধরনের ফরম্যাট পছন্দ করেন? ভিডিও মাধ্যম কিংবা লিখিত মাধ্যম? 
  • আপনি তাদের কি ধরনের তথ্য উপস্থাপন করতে চাচ্ছেন? আপনার কথার স্বর কেমন হয় উচিত?
  • আপনি যত বেশি আপনার কাস্টমারকে চিনবেন তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা তত বেশি সহজ হবে।

৪. অর্ডিয়েন্সের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা

একটি নির্দিষ্ট ব্যাপারে গ্রাহকদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে লিখিত কন্টেন্টের মাধ্যমে আপনি গ্রাহকদের সাথে সুন্দর এবং ভালো সম্পর্ক রক্ষা করতে পারবেন। গ্রাহকদের সাথে সম্পর্ক রক্ষার অন্যতম উপায় হল আপনার লিখিত লেখা এবং কন্টেন্ট। 

 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বা এসএমএম?

আপনারা সোশ্যাল মিডিয়া (social media) বললে কি বোঝায়, সেটা অবশই জানেন। হে, প্রত্যেক দিন মোবাইলে বা কম্পিউটারে ব্যবহার করা “Facebook“, “Twitter“, “Instagram“, “YouTube”, Pinterest এগুলি হলো কিছু বিখ্যাত সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম।

এই বিখ্যাত এবং এদের মতোই আরো অনেক সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম (social media platform) ব্যবহার কোরে, আমরা বিভিন্ন চেনা অচেনা লোকেদের সাথে কথা বলি, ছবি, ভিডিও এবং স্ট্যাটাসের মাধ্যমে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করি।

কিন্তু, আজ অনেক ক্ষেত্রে, এই সোশ্যাল মিডিয়া গুলি, “অনলাইন মার্কেটিং” (online marketing) এর এক অনেক শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবং, products, brands, services এগুলির প্রোমোশনের জন্য এদের ব্যবহার হচ্ছে।

 

অনলাইন মার্কেটিং, এমন এক মার্কেটিং এর মাধ্যম যেখানে আমরা অনলাইন ইন্টারনেটে সক্রিয় থাকা লোকেদের কাছে নিজের পণ্য , সার্ভিস, বিসনেস  বা যেকোনো জিনিস প্রচার ব করে সে বিষয়ে তাদের জানাতে পারি বা পণ্যের জন্য ক্রেতা  পেয়ে যেতে পারি।

এখন, ইন্টারনেটে অনলাইন সক্রিয় থাকা লোকেদের মধ্যে অনেক বড়ো সংখ্যায় লোকেরা social media platform গুলি ব্যবহার করেন। তাই, এই Facebook, Twitter, Instagram, YouTube আর এরকম বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম গুলিতে পণ্য বা ব্যবসা প্রচার করাটা অনেক লাভজনক প্রমাণিত হচ্ছে।

এতে, ঘরে বসে থাকা লোকেরাও আপনার প্রচার বা মার্কেটিং করা business, product বা service অনেক সহজেই দেখেনিতে পারবেন। আর, পুরোটাই হবে ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে।

আজ, প্রত্যেকটি কোম্পানি বা ব্র্যান্ড (brand) এর social media profiles রয়েছে। তারা, Facebook page, Instagram page, Twitter page বা YouTube channel এর মাধ্যমে তাদের পণ্য (product), service, business বা brand এর promotion করছেন ইন্টারনেটে সক্রিয় থাকা সেই অসংখক লোকেদের কাছে।

এই মাধ্যমে পণ্যের প্রচার অনেক সহজ এবং অনেক কম সময়ে যেকোনো জিনিসের প্রচার বা মার্কেটিং করা যেতে পারে।

 

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং?

ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দৃষ্টিকোণ থেকে, Affiliate marketing হচ্ছে এক ধরণের বিশেষ marketing কৌশল যার মাধ্যমে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার অধিভুক্ত বা সম্পর্কযুক্ত ব্যাক্তি দ্বারা ঐ প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য বা পরিষেবার প্রচার করিয়ে থাকে এবং প্রতিটি সফল বিক্রয়ের জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কমিশন বা লভ্যাংশ প্রদান করে।

সেলারের দৃষ্টিকোণ থেকে,

যে ব্যবসায়িক কৌশলে একজন খুচরা বিক্রেতা তার রেফারেল বা সুপারিশ থেকে উৎপন্ন ট্র্যাফিক বা বিক্রয়ের জন্য মুল প্রতিষ্ঠান বা ওয়েবসাইট থেকে কমিশন বা লভ্যাংশ পেয়ে থাকে, তাকে Affiliate marketing বলা হয়। 

আরোও সহজ করে বলতে হলে,

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল এমন একটি বিপণন ব্যবস্থা যেখানে একজন সেলার একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে সেই প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা প্রচার করে এবং বিক্রয় করে এবং প্রতিটি বিক্রয়ের জন্য কমিশন উপার্জন করে। 

English Definition:

ব্যবসা সংক্রান্ত ওয়েবসাইট bigcommerce ডট কম এর মতে,

“the process by which an affiliate earns a commission for marketing another person’s or company’s products.”

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বিষয়ে আরো জানুন: 

Affiliate Marketing একটি কর্মদক্ষতা ভিত্তিক বিপনন কৌশল। এখানে একজন বিক্রেতা যত বেশি পণ্য বিক্রয় করতে পারবে তত বেশি লাভ অর্জন করবে। এটি উৎপাদনকারী এবং বিক্রেতা উভয়ের জন্যই একটি লাভজনক পরিস্থিতি তৈরি করে। এই ক্ষেত্রে মুল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রচুর ক্রেতা পেয়ে থাকে এবং অ্যাফিলিয়েটেড বিক্রেতা প্রতিটি বিক্রয়ের জন্য একটি কমিশন উপার্জন করতে পারে। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটি সাশ্রয়ী। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসমূহ কেবলমাত্র অ্যাফিলিয়েটদেরকে তখনই অর্থ প্রদান করে যখন তারা বিক্রয় করে। এখানে কোনও আগাম খরচ বা ঝুঁকি জড়িত নেই৷

বিভিন্ন ধরনের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোগ্রাম রয়েছে। যেমন:

  1. Pay per Click (PPC), 
  2. Pay per Lead (PPL) এবং 
  3. Pay per Sale (PPS) 

Pay per Click প্রোগ্রামগুলি তাদের রেফারেল লিঙ্কে প্রতিটি ক্লিকের জন্য অ্যাফিলিয়েটদের আয় দিয়ে থাকে। রেফারেল লিঙ্কের মাধ্যমে তৈরি করা প্রতিটি লিডের জন্য Pay per Lead প্রোগ্রাম অ্যাফিলিয়েটদের আয় প্রদান করে। Pay-per Sale প্রোগ্রামগুলি তাদের রেফারেল লিঙ্কের মাধ্যমে করা প্রতিটি বিক্রয়ের জন্য অ্যাফিলিয়েটদের আয় প্রদান করে।

Affiliate Marketing এর প্রকারভেদ: 

এই মার্কেটিং কে তিন প্রকারে ভাগ করা যেতে পারে:

Unattached Affiliate Marketing 

এটি এমন একটি মডেল যেখানে অ্যাফিলিয়েটদের তাদের প্রচারকৃত পণ্য বা পরিষেবার সাথে কোনও সংযোগ থাকে না৷ সম্ভাব্য গ্রাহক এবং পণ্যের সাথে সংযুক্ত না হওয়ার কারনে অ্যাফিলিয়েটগণ কোনো প্রকারের সুপারিশ বা পরামর্শ দিতে পারেন না। 

Related Affiliate Marketing 

নাম থেকেই বোঝা যায়, এই ধরণের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে পণ্য বা পরিসেবার সাথে সম্পর্কিত থেকে প্রচার বা বিপনন করা। জনগণের আগ্রহ তৈরি করার জন্য এই ক্ষেত্রে অ্যাফিলিয়েটের যথেষ্ট প্রভাব এবং দক্ষতা প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রে সম্ভাব্য ক্রেতাদের সাথে সংযুক্ত হওয়ার অনুমতি প্রদান করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে এই ধরনের মার্কেটিং এর সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের থেকে পরামর্শ গ্রহণ করা হয়, কিন্তু তারা পণ্য বা সেবা ব্যবহার করেছে এমন দাবি করতে পারে না।  

Involved Affiliate Marketing 

এই ধরনের মার্কেটিং, প্রচারকারী এবং পণ্য বা সেবার মাঝে গভীর সংযোগ স্থাপন করে। এই ক্ষেত্রে এফিলিয়েটগণ দাবি করেন যে তারা পন্যটি ব্যবহার করেছেন কিংবা বর্তমানে ব্যবহার করছেন। এই ক্ষেত্রে তাদের মন্তব্য পণ্য সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্যতা এবং আস্থা অর্জনে সাহায্য করে। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর বাস্তব উদাহরণ

Amazon Affiliate Program তাদের অ্যাফিলিয়েটদের অ্যামাজনে যেকোনো পণ্য প্রচার করতে এবং তাদের রেফারেল লিঙ্কের মাধ্যমে করা প্রতিটি বিক্রয়ের জন্য একটি কমিশন উপার্জন করার সুযোগ করে দেয়। এছাড়াও বিশ্বের বড় বড় অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যারা বিশ্বব্যাপী এই সুবিধা প্রদান করে থাকে। 

আফ্রিকাতে, Jumia বৃহত্তম ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে একটি। এর একটি অনুমোদিত প্রোগ্রাম রয়েছে যা অনুমোদিতদের জুমিয়ার পণ্যগুলিকে প্রচার করতে ৷ এই প্রোগ্রামটি জুমিয়াকে আরও বৃহত্তর দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে এবং এর আয় বাড়াতে সাহায্য করেছে। 

Daraz, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বৃহত্তম ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম। এটি নিজের এফিলিয়েট প্রোগ্রামের মাধ্যমে দারাজকে তার বিক্রয় বাড়াতে এবং অনেক ক্রেতার কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে। এফিলিয়েট প্রোগ্রাম এর আওতায় প্রতিষ্ঠানটি নেপাল, শ্রীলংকা এবং মিয়ানমারেও নিজেদের কার্যক্রম শুরু করেছে। ভারতে Flipcart ও একই পন্থা অবলম্বন করে থাকে। 

Palamou বাংলাদেশ ভিত্তিক পণ্য সরবরাহ ও ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস। এর বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার মাঝে রয়েছে রিসেলিং। অর্থাৎ একজন এফিলিয়েট এই প্রতিষ্ঠান থেকে কোন একটি পণ্য ক্রয় না করেই অন্য কোথাও বিক্রয়ের সুযোগ পেয়ে থাকে। 

 

 

ইমেইল মার্কেটিং?

ইমেইল মার্কেটিং কি এবং কিভাবে কাজ করে, এই বেপারে আজ অনেকেই অনেক কিছু জানতে চান। কারণ, অনলাইন ইন্টারনেটে ডিজিটালি যেকোনো পণ্য (product) বা সার্ভিস (service) মার্কেটিং করার এ অনেক সহজ এবং লাভজনক উপায়। Email marketing এমন একটি online marketing technique যার দ্বারা আপনি আপনার product বা কনটেন্ট এর জন্য অনেক কাস্টমার ইমেইল (email) এর মাধ্যমে ঘরে বসেই পেয়ে যাবেন।

 

সিপিএ মার্কেটিং ?

What is CPA marketing? CPA এর ফুল মিনিং হচ্ছে Cost Per Action. অনেকেই এখন CPA মার্কেটিং পচ্ছন্দ করে কারন, সিপিএ মার্কেটিং এ  এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মত পোডাক্ট বিক্রি করতে হয় না এবং এখানে বিভিন্ন ধরনের অফার থাকে। মনে করুন একটি Website (যেমন Facebook) তাদের ওয়েবসাইটের জন্য কিছু সংখ্যক নতুন মেম্বারস খুজছে, এখন আপনার কাজ হচ্ছে আপনার কাষ্টমার কে শুধুমাত্র রেজিস্টার করানো আপনার এফিলিয়েট লিংক এ। এটাকে ইমেইল সাবমিট বলে।

এখানে আপনার কাষ্টমার রেজিস্টার কারার পর যদি পোডাক্ট/সার্ভিস নাও নেয় তাহলেও আপনি কমিশন পাবেন। কিন্তু এফিলিয়েট মার্কেট হচ্ছে ভিন্ন। এফিলিয়েট মার্কেটে যতক্ষন আপনার পোডাক্ট বিক্রি না হয় ততক্ষন আপনি কমিশন পাবেন না এবং এর কারনেই অনলাইন জুড়ে CPA marketing এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

সিপিএ তে কি কি অফার পাওয়া যায় ?

 

সিপিএ তে বিভিন্ন ধরনের অফার পাওয়া যায়। এর মধ্যে রয়েছে :

Pay per download :
এ ধরনের অফার গুলো হয় সফটওয়্যার ডাউনলোড, গেমস ডাউনলোড ইত্যাদি।

Pay per lead :
এ ধরনের অফার গুলো হয় সাইন আপ, ইমেইল সাবমিট ইত্যাদি।

Pay per sale :
এ ধরনের অফার গুলো হয় সেল জাতীয় যেমন হেল্থ, ইনসিওরেন্স ইত্যাদি।

CPA মার্কেটিং এর কিছু শব্দ পরিচিতি

Advertiser: এটা হল সেই সাইট বা ব্যক্তি যারা CPA নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের বিজ্ঞাপণ দিয়ে থাকে। হতে পারে সে রিটেইলার, অনলাইন রিটেইলার অথবা মার্চেন্ট।

Publisher:
publisher হল সেই ব্যাক্তি যারা কমিশনের জন্য cpa থেকে কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রোমোট করে, সহজ কথায় এখানে আপনি, আমিই সেই পাবলিশার।

PPL (Pay-Per-Lead):
সহজ ভাষায় আপনাকে প্রতিটা লিড এর জন্য পে করা হবে।ধরুন- আপনি কোন এডভার্টাইজার এর প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপণ করলেন অনলাইনে ১০০ জন CANADA এর নাগরিকের কাছে। পরবর্তিতে এর মধ্যে ধরি ১০ জন নাম ও ইমেল এড্রেস দিয়েএকটি ফর্ম পুরন করল। তার মানে আপনি ১০টি লিড পেয়ে গেলেন এবং আপনাকে এই ১০টি লিডের জন্য পে করা হবে।(এক্ষেত্রে প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল করা আবশ্যিক নয়, শুধুমাত্র রেজিষ্টেশন নয় ফরম পুরনের জন্য আপনাকে পে করা হবে).PPL Offer গুলোতে সাধারনত $.50 থেকে শুরু করে $50 ডলার পর্যন্ত কমিশন দেওয়া হয়।

PPS (Pay-Per-Sell):
অনলাইনে অনেক Website বা সার্ভিস রয়েছে যেখানে সাইনাপ করতে টাকা দিতে হয়, এধরনের অফারকে বলা হয় PPS Offer। এ ধরনের অফারে আপনার এফিলিয়েট লিংক থেকে কেও সাইনআপ করলে আপনাকে কমিশন দেওয়া হবে । PPS Offer গুলোতে সাধারনত $10 থেকে শুরু করে $250 ডলার পর্যন্ত কমিশন দেওয়া হয়।

 

ডিজিটাল মার্কেটিং কেন প্রয়োজন?

বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি অপরিহার্য অংশ। কারণ মানুষ এখন যেকোন পণ্য ক্রয় করার আগে ইন্টারনেটে ওই পন্য সম্পর্কে জেনে বুঝে তারপর ক্রয় করে। তাছাড়া মানুষ এখন দোকানে ঘুরে ঘুরে না কিনে, অনলাইন থেকেই বেশিরভাগ কেনা কাটা করে থাকে।

তাই আপনি যদি একজন ব্যবসায়ী হন, তাহলে আপনার উচিত ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে নিজের ব্যবসাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া। আসুন আমরা বর্তমান যুগে ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তাগুলো জেনে নেই।

  • সমগ্র বিশ্বে মোট প্রায় ২ বিলিয়ন মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। আর এই সংখ্যাটি নিয়মিতভাবে বেড়ে চলেছে। মানুষ যত বেশি ইন্টারনেটে ব্যবহার করবে তত বেশি মানুষের সামনে আপনি আপনার পণ্যের মার্কেটিং করতে পারবেন। আর ইন্টারনেটে পণ্যের মার্কেটিং এ ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব কতখানি তা আপনি আমাদের উপরের আলোচনা পড়লেই বুঝতে পারার কথা।
  • বর্তমান বিশ্বে মোট প্রায় ৫.১১ বিলিয়ন মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। আর এই সংখ্যা খুবই দ্রুত গতির সাথে বেড়ে চলেছে। এখন অনেক মানুষ আছে যারা একাধিক মোবাইল ব্যবহার করেন তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক রাখার জন্যে। আর এই মোবাইল ফোন হচ্ছে ক্রেতার তথ্য কালেকশনের অন্যতম মাধ্যম। কারণ প্রায় সকল মোবাইল ব্যবহারকারীই ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত। তাই এই ব্যবহারকারীর সংখ্যা যত বাড়বে ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তাও বাড়বে।
  • আপনি জেনে অবাক হবে যে, একটা স্ট্যাটিসটিক্সের মাধ্যমে ইউজার সার্ভে রিপোর্ট উল্লেখ করেছে যে, প্রায় ৮৪% বিক্রেতা, মার্কেটার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে ক্রেতার তথ্য সংগ্রহ করার জন্যে।
  • এছাড়া আরো একটি সার্ভে রেজাল্ট দেখিয়েছে যে, সারা বিশ্বে ৫৫% মানুষ যেকোন পন্য ক্রয়ের জন্যে সামাজিক মাধ্যমের ওপর নির্ভরশীল। মানে হচ্ছে, তারা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তাদের পছন্দের পণ্য সম্পর্কে তথ্য এবং রিভিউ জানতে পারে। আর ক্রেতা যার প্রেজেন্টেশন ও পণ্যকে পছন্দ করবে তার কাছ থেকে অনলাইনের মাধ্যমেই ক্রয় করে ফেলে।
  • ৪৩% ই-কমার্স ক্রেতা গুগলে সার্চ করে তাদের পছন্দের ই-কমার্স ওয়েবসাইটে আসে।
  • বিশ্বে প্রায় ৫১% ক্রেতা তাদের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা অনলাইন থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে করে থাকে। এই সংখ্যাটিও দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।
  • ৭০% ক্রেতা যেকোন পণ্য কেনার আগে ইন্টার্নেটে সার্চ দিয়ে সেই পণ্য সম্পর্কে যাচাই বাছাই করেন। পণ্যটি পচ্ছন্দ হলে সাথে সাথেই ঘরে বসেই অনলাইনে অর্ডার করে ফেলেন।
  • আরো একটি মজার ব্যাপার হচ্ছে, ৮২% ক্রেতা মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যেই বিক্রেতার সাথে তাদের লাইভ চ্যাটের মাধ্যমে কথা বলতে চান।

আপনি হয়ত এখন কিছুটা হলেও বুঝতে পারছেন, আপনার ক্রেতারা কিভাবে অনলাইনে তাদের কেনাকাটা সম্পন্ন করেন। তাই আপনি যদি এই ডিজিটাল যুগে, ডিজিটাল মার্কেটে টিকে থাকতে চান, তাহলে আপনার এখনই ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে ভাবা উচিত।

কারণ আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী কিন্তু বসে নেই, সে কিন্তু তার ব্যবসাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছেন। Coca-ColaUnileverNestlé এর মতো বড় বড় কোম্পানীগুলোও কিন্তু বেশ তোড়জোড়ের সাথেই বর্তমানে ডিজিটাল দুনিয়াতে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে।

আসুন এখন আমরা ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করি।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ কি?

দেখুন, বর্তমান বিশ্বের বাজার ব্যবস্থা যেভাবে ডিজিটাল ইন্ডাস্ট্রিতে রূপ নিচ্ছে। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, যখন মানুষ আর দোকানে কিংবা বাজারে গিয়ে পণ্য কেনা বন্ধ করে দিবে। তারা সবকিছু অনলাইনেই কিনে নিবে। কারণ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে জীবনযাত্রা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে।

আর মানুষ সময় নষ্ট করে বাজারে গিয়ে পণ্য যাচাই বাছাই করার থেকে অনলাইনে যেকোন পণ্য সম্পর্কে সার্চ করে ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা জেনে নিতে পারে। আর পছন্দ হলে সেই পণ্য একটি বিশ্বাসযোগ্য বিক্রেতার কাছ থেকে অনলাইনের মাধ্যমেই কিনে নিতে পারে।

 আর এই অনলাইন বাজার ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ওপর নির্ভরশীল। আপনি যদি এখনই নিজেকে ডিজিটাল মার্কেটিং এ দক্ষ করে না তুলতে পারেন, তাহলে আপনি এই বাজার ব্যবস্থায় টিকে থাকতে পারবেন না। কারণ আপনার পণ্য সম্পর্কে যদি মানুষ অনলাইনে জানতেই না পারে, কিংবা আপনার পণ্য যদি অনলাইনে কিনতে না পারে, তাহলে কোন ক্রেতাই আপনার পণ্য কিনবে না।

আপনি যদি ভবিষ্যতে আপনার ব্যবসাকে সফল হিসাবে দেখতে চান তাহলে এখনি সময়। এখনি উত্তম সময়, নিজেকে এবং নিজের ব্যবসাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর আওতায় নিয়ে এসে, ক্রেতার সামনে আকর্ষনীয়ভাবে নিজের পণ্যকে তুলে ধরার।

লেখকের ফাইভার আইডি লিংকঃ https://www.fiverr.com/jubaeri

 

spot_img
পূর্ববর্তী নিবন্ধমিরপুরে যাত্রীবাহী বাসে আগুন
পরবর্তী নিবন্ধআত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তানজিন তিশা?

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে