কক্সবাজারের টেকনাফ মহাসড়কের রামুর মরিচ্যা যৌথ চেকপোস্টে লবণবোঝাই একটি ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৯০ কোটি টাকা মূল্যের ১৮ কেজি ২০০ গ্রাম ভয়াল মাদক ক্রিস্টাল মেথ আইস উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি।
আজ শুক্রবার ভোরে এ অভিযানের সময় ট্রাকচালক ও সহকারীকে আটক করা হয়। বিজিবি সদস্যরা মাদকের চালানের মূল হোতা টেকনাফের সাবরাং ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক হোছাইন আহমদকে গ্রেপ্তারের জন্য দফায় দফায় অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছে।
এ সময় আইস ছাড়াও নগদ তিন লাখ ৩৬ হাজার টাকা, এক বোতল বিদেশি মদ, একটি ছোরা ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজারের রামুতে বিজিবি-৩০ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান তানজিদ।
লবণের আড়ালে মাদকের চালানটির সঙ্গে আটককৃতরা হলেন ট্রাকটির চালক টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের নোয়াখালিয়া পাড়ার মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে মো. কেফায়েত উল্লাহ (৩৮) এবং টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়া পাড়ার আবু বকরের ছেলে মো. হারুন (২৩)। তারা ট্রাকের চালক ও সহকারী।
লে. কর্নেল সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান তানজিদ বলেন, শুক্রবার ভোররাতে টেকনাফ সীমান্তের সাবরাং এলাকা থেকে মাদকের বড় একটি চালান নারায়ণগঞ্জে পাচারের খবরে বিজিবির রামু উপজেলার মরিচ্যা চেকপোস্টে তল্লাশি জোরদার করা হয়।
একপর্যায়ে টেকনাফ থেকে আসা লবণবোঝাই একটি ট্রাকে তল্লাশি চালিয়ে লবণের একটি বস্তার ভেতরে কাপড় মোড়ানো অবস্থা থেকে ১৮ কেজি ২০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস উদ্ধার করা হয়। এরপর আটককৃতদের হেফাজত থেকে নগদ টাকাসহ অন্যান্য সাগ্রী পাওয়া যায়।
বিজিবির এ কর্মকর্তা বলেন, মাদকের এ চালানটির মূলহোতা টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের ডেইল্যারবিল এলাকার কালা মিয়া প্রকাশ দুবাই কালুর ছেলে হোসাইন আহমদ (৪১)। শুক্রবার তাকে আটক করতে টেকনাফের সাবরাংয়ে ব্যাপক অভিযান চালানো হয়।
তিনি বর্তমানে পলাতক।
বিজিবির এই কর্মকর্তা আরো জানান, হোছাইন আহমদের বিদেশে পলায়ন ঠেকাতে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়েছে।
এলাকার লোকজন জানিয়েছেন, হোসাইন আহমদ দীর্ঘদিন ধরে লবণের আড়ালে মাদক পাচার করে আসছিলেন। তিনি টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এটা নিশ্চিত করেছেন একই ওয়ার্ডের দলীয় সভাপতি মোহাম্মদ শরীফ মেম্বার এবং সাবরাং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোনা আলী।
তারা আরো জানান, হোছাইন আহমদ দুই বছরের মধ্যে বিপুল পরিমাণ সম্পদ কিনেছেন। আটক হওয়া লবণবোঝাই ট্রাকসহ আরো সাত-আটটি গাড়িও রয়েছে তার। প্রতি উৎপাদন মৌসুমে তিনি নিজেও লবণের চাষ করেন এবং সেই সঙ্গে কিনে মজুদও করেন। সারা বছর নারায়ণগঞ্জে লবণ পরিবহন করেন তিনি। আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে রামু থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান বিজিবি কর্মকর্তা।