রাজধানীর শাহজাহানপুরে গুলিতে নিহত মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে দুবাই বসে হত্যার পরিকল্পনা ও নির্দেশনা দেন সুমন শিকদার ওরফে মুসা। টিপু হত্যাকাণ্ডের ঠিক ১২ দিন আগে দুবাই চলে যান মুসা। সেখানে বসে হত্যার পুরো ছক তৈরি করেন তিনি। র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া এই ওমর ফারুকসহ চারজনের জবানিতে বেরিয়ে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
এ ঘটনায় গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- ঘটনার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ও ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক (৫২), পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ (৩৮), মো. নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির (৩৮) এবং মো. মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ (৫১)।
গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডটি দেশে সংঘটিত হলেও নিয়ন্ত্রণ করা হয় দুবাই থেকে। দেশে থাকা নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির, মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশসহ আরও কয়েকজন জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে বেশ কয়েকদিন ধরে মুসার কাছে তথ্য পাঠাতেন।
ঘটনার দিন সন্ধ্যার পর গ্রেফতার নাছির উদ্দিন ওরফে কিলার নাছির আনুমানিক চারবার জাহিদুল ইসলাম টিপুর অবস্থান সম্পর্কে মুসাকে জানান। পরে জাহিদুল ইসলাম টিপু গ্র্যান্ড সুলতান রেস্টুরেন্ট থেকে বের হওয়ার সময় মোরশেদুল আলম ওরফে কাইল্লা পলাশ তাকে নজরদারিতে রাখেন এবং তার অবস্থান সম্পর্কে তিনি ফ্রিডম মানিককে জানান করেন। টিপুর অবস্থান জানানোর পরিপ্রেক্ষিতে আনুমানিক রাত সাড়ে ১০টার দিকে আন্ডার ওয়ার্ল্ডের তত্ত্বাবধানে কিলার কর্তৃক হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হয়।
মুসাকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগ : দুবাই থেকে মুসাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মুসার অবস্থান শনাক্ত করার বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে শেয়ার করা হচ্ছে। দুবাইয়ে তিনি কোথায় কী অবস্থায় আছেন, সে সম্পর্কে কিছু তথ্য আমরা পেয়েছি। সেসব তথ্য পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে যেসব সংস্থাকে দেওয়া প্রয়োজন ও যে মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব, সেসব কার্যক্রম নেওয়া হচ্ছে। কারণ তাকে না পাওয়া গেলে টিপু হত্যার পুরো পরিকল্পনা সম্পর্কে জানা কঠিন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, হত্যাকাণ্ডটি কাটআউট পদ্ধতিতে করা হয়। গ্রেপ্তার নাছির ও ওমর ফারুকের কাছে পরিকল্পনার তথ্য রয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা মুসাকে দায়িত্ব দেন। মুসা সমন্বয়কারী হিসেবে দুবাইয়ে বসে আন্ডার ওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সমন্বয় ও কিলার নিয়োগ করেন। মুসা কাকে শুটার হিসেবে নিয়োগ দেন— তা এখনো জানা যায়নি।




















