রোহিঙ্গাদের দ্রুত তাদের স্বদেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে ঢাকার পাশাপাশি নেপিদো কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কাজ করছে ভারত। মিয়ানমার থেকে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া লোকদের স্বদেশে দ্রুত প্রত্যাবাসন করতে হবে, এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের অকুণ্ঠ সমর্থন আছে। এজন্য রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরির চেষ্টাও চালাচ্ছে দেশটি।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে ওল্ড ইন্ডিয়া হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের স্বদেশে দ্রুত প্রত্যাবাসন করতে হবে, এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতি ভারতের অকুণ্ঠ সমর্থন আছে, সহযোগিতা থাকবে। তবে প্রত্যাবাসন হতে হবে স্থায়ী ও নিরাপদ পরিবেশে। আমরা এজন্য ওই পাশেও (মিয়ানমার) কাজ করছি, যেন এই লোকেরা (রোহিঙ্গা) সেখানে নিরাপদে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ পায়। আমরা মনে করি, যে কোনো সংকটে কূটনীতিই সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এজন্যই আমরা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এবং আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করছি, যেন কার্যকরভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যায়।
সংবাদ সম্মেলনে হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দ্বোরাইস্বামী বলেন, আগামী বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জি-২০ সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে ভারত। ২০২৩ সালে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ওই সম্মেলনে বাংলাদেশকে প্রতিবেশী দেশের অংশীদারিত্বের কারণে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
বিদায়ী এ হাইকমিশনার বলেন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে অতিথি করা হচ্ছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জি-২০ সম্মেলন হতে যাচ্ছে। সেই সম্মেলনে বাংলাদেশ অতিথি দেশ হিসেবে অংশ নেবে। যা অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে আরও ইতিবাচক হিসেবে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরের কিছু অগ্রগতি তুলে ধরেন তিনি। কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টন সংক্রান্ত চুক্তি, ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সেপা) করতে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা, বাণিজ্য ও যোগাযোগ সংক্রান্ত বেশ কিছু সমঝোতা স্মারকের কথা তুলে ধরে হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ‘ফলপ্রসূ’ হয়েছে।
দোরাইস্বামী বলেন, আঞ্চলিক, অর্থনৈতিক, সড়ক ও রেলের ক্ষেত্রে উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের পাশে থাকবে ভারত। দীর্ঘ ১২ বছর পর যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই সঙ্গে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে কুশিয়ারা এবং গঙ্গার পানির বিষয়ক সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ বিষয়ে ভবিষ্যতে দুই দেশের মানুষ সুফল পাবে বলেও আশা করেন বিক্রম কুমার দ্বোরাইস্বামী।
২০২০ সালের অক্টোবরের শুরুর দিকে ঢাকায় আসেন হাইকমিশনার দোরাইস্বামী। প্রায় দুই বছর ঢাকায় দায়িত্ব পালন শেষে নয়াদিল্লি ফিরে যাচ্ছেন তিনি।
ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, ঢাকায় দায়িত্ব পালন শেষে বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী যুক্তরাজ্যে ভারতের রাষ্ট্রদূত হতে যাচ্ছেন। আর তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে বাংলাদেশে হাইকমিশনার হিসেবে আসছেন প্রণয় কুমার ভার্মা। তিনি এর আগে ভিয়েতনামে ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।




















