কচু আর লতির জন্যই চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার কয়েকটি গ্রাম দীর্ঘ কয়েক দশক থেকেই বিখ্যাত। এ বছরও উপজেলার কচুয়া গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে বাম্পার ফলন হয়েছে। ১১নং মঘাদিয়া ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামেই অর্ধশতাধিক কৃষক এবার লাখপতি হয়েছেন কচু আর কচুর লতিতে।
মঘাদিয়া গ্রামের কচুয়া গ্রামের কচুচাষি সাইফুল ইসলাম (৩২) জানান, তিনি গ্রামের কয়েকটি জমিতে কচু চাষ করেছেন। কচু চাষ ও পরিচর্যায় খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো; বিক্রি করে পাওয়া গেছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। ২০ হাজার টাকা খরচ বাদ দিলে লাখ টাকাই আয় হয়েছে তার। প্রতি বছরই কমবেশি কচু চাষ করেন তিনি।
একই গ্রামে আরও প্রায় ৫০ জন কৃষক কচু চাষ করে লাখপতি হয়েছেন বলে জানান অপর কৃষক দিদারুল আলম (৪২)।
এছাড়া এবার কচু ও কচুর লতি চাষ করে পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের হাইতকান্দি, মিঠানালা, কাটাছরা, দুর্গাপুর, ওচমানপুর, হিঙ্গুলীসহ উপজেলায় কয়েকশ কৃষক লাখপতি হয়েছে। এ মৌসুমে সব কচু চাষিরা ভাদ্র আশ্বিন প্রায় ২ মাস ব্যস্তই থাকে কচু তোলা আর বিক্রি নিয়ে। কচু কাটা, পরিষ্কার করা, কচুর লতি তোলা, সারি সারি আটি তৈরি করা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় কচু চাষের গ্রামগুলোতে।
সেখান থেকে সিএনজি বা ভ্যানে করে মহাসড়কের হাটে। বিক্রির পর পাইকারদের ট্রাকে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় ও যাচ্ছে এখন মীরসরাইয়্যা কচু বলে খ্যাত এ সবজি পণ্য।
মলিয়াইশ গ্রামের মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রতিটি কচু পাইকারি ৩০-৪০ টাকা করে বিক্রয় হচ্ছে। প্রতি বছরের মতো এবারো ভালো ফলনে খুশি সবাই।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম জানান, মীরসরাইয়ের অনেক এলাকায় বর্ষা মৌসুম কচু চাষের জন্য যথেষ্ট উপযোগী। সম্প্রতি নানান জাতের কচুর চাষাবাদে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে দেশি কচুর পাশাপাশি আমরা লতিরাজ নামের একটি কচুতে কৃষকরা বেশি সুফল পাচ্ছে। কচুর পাশাপাশি লতিরও ভালো আবাদ হয় বলে লতিরাজ এখন কৃষকবান্ধব বলে অভিহিত। এর আবাদ বৃদ্ধিতে আমরাও সবাইকে সব সহযোগিতা প্রদান করতে প্রস্তুত সব সময়।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে লতিরাজ কচু অনেক জনপ্রিয় সবজি। বর্তমানে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও লতি রপ্তানি করা হচ্ছে। কচুর লতি মূলত পানি কচুই। লতিরাজ কচুতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে। উৎপাদনের দিক দিয়ে মুখীকচুর পরই কচুর লতির স্থান।
